ফিরে দেখা জীবনের ছবি
অগাস্ট মাসের ১ম সপ্তাহে যাদের জন্ম তাদের জীবনে একটা বিশেষ দিন আসে। কত বছর পরপর আসে তা জানি না। আমি অংকে খুবই দূর্বল। যাকে বলে লজ্জা পাবার মত দূর্বল। তো সেই বিশেষ দিনটা আমার জীবনে এসেছিল একবার ২০০৭ এ। আর এবার আসলো ২০১২ তে। ভবিষ্যতে আসবে কিনা জানি না। যদি না আসে- সেই ভয় থেকেই এই লেখার সূচনা। যদি না বলে যেতে পারি এই কথা গুলো? সেই ভাবনা থেকেই কলম ধরা। যাইহোক, বিশেষ দিন বলছি এজন্য যে এই অগাস্টের ১ম সপ্তাহে জন্মগ্রহণকারীদের জীবনে জন্মদিন আর বন্ধু দিবস মাঝে মাঝে একই দিনে পড়ে যায়। আজ ৫ই অগাস্ট। বন্ধু দিবস আবার একই সাথে আমার জন্মদিনও। বন্ধু দিবস নিয়ে লিখতে বসে নিজের জন্মদিন টেনে আনাটা মোটেও ঠিক হচ্ছে না। কিন্তু কেন যেন ব্যাপারটা চলে আসছে। হয়তো অবচেতন মনের কারসাজি। সেটা যাই হোক না কেন বন্ধু দিবসে বন্ধুদের নিয়েই কথা হবে তাতে নিজের জীবনের কথাই তো বলে ফেলা হবে তাই না? এজন্যই জন্মদিন টানলাম।
সুদীর্ঘ সময় পাড়ি দিয়ে আসা একটা জীবনে আজ ঘুম থেকে উঠে যখন আনমনে পিছনে ফিরে তাকালাম তখন হঠাৎ বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো। আমি প্রবল হতাশায় আছন্ন হয়ে দেখলাম আমার চারপাশে কোথাও কেউ নেই। আমি ইউকে-র ছোট্ট একটা ঘরে ফ্লোরে মেট্রেসের উপর বসে আছি। আমার সামনে বিশাল এক অজানা ভবিষ্যত আর পিছনে একরাশ হতাশার কালো অন্ধকার। সেই অন্ধকার হাতড়ে আঁতিপাঁতি করে খুঁজে আমি উজ্জ্বল কিছুই পাইনা। শুধু বন্ধু নামক কিছু মানুষের সাথে কাটানো কিছু সময়ের স্মৃতি হারিকেনের মৃদু টিমটিমে আলোর মত জ্বলছে। সেই স্মৃতি হাতড়ে যখন অতীতে ফিরে যাই কেন যেন খুব কষ্ট লাগে। আমি জানি মানুষ হিসাবে আমার মনের ভিতরে আবেগের একটা নায়াগ্রা বয়ে যাচ্ছে। সেই জলপ্রপাতে অনেকেই তাদের পিপাসা মিটিয়েছে। কিন্তু বেশীর ভাগ সময় সেই আবেগ ও ভালোবাসার যথাযথ সম্মানটুকু দেয়নি এইযা। এ নিয়ে কষ্ট থাকলেও আক্ষেপ করিনা। হয়তো আমার এই আবেগের জল জীবনের বাজারে অনেক সস্তা।
ছোট্ট বেলায় অনেক খেলার সাথী ছিল আমার। দুইরুমের ছোট্ট টিনের চালার সামনে একটুকরো উঠানের মত জায়গা ছিল আমাদের ভাড়া বাসায়। খুব ছোট সেই উঠানে একটা বড় মেহেদি গাছ ছিল আমার খেলার সাথী। আমার কষ্ট আর অভিমানের সময়গুলো আমি ঐ গাছের একটা নিচু ডালে বসে কাটাতাম। কালের বিবর্তনে আমার সেই ১ম বন্ধুটি হারিয়ে গেছে বহু বহু বছর আগেই। কিন্তু আজো আমি তার অভাব অনুভব করি। তাই বলে আমার সকল বন্ধু কিন্তু গাছপালার সাথে হয়নি। তার মধ্যে মানুষও ছিল। ছোট বড় মিলে সংখ্যায় অনেক। তবে তাদের মধ্যে একজন ছিল আমার চেয়ে বয়সে একটু ছোট যার সাথে আমার খাতিরটা একটু বেশীই ছিল অন্যদের চেয়ে। ওর নাম ডন। না, মাফিয়া ডনদের মত ছিলনা মোটেও। হালকা-পাতলা একটা ছেলে। তুই-তুকারির এই বন্ধুত্বের সম্পর্কটা অনেক গাঢ় ছিলো সন্দেহ নেই। মারামারি, মাথা ফাটানো থেকে শুরু করে একসাথে নিউমার্কেটে হারিয়ে যাওয়া সবই করেছি আমরা। এরপর আবার আমরা হারিয়েছিলাম দুজনকে আমাদের বাসা বদলের সুবাদে। যোগাযোগ ছিল। শেষ দেখা দেশ ছেড়ে আসার আগে। ওর বিয়েতে। বউ আবার আমার মেডিকেলের শিক্ষক জীবনের ১ম ব্যাচের ছাত্রী। বিয়েতে যেয়ে দেখে চিনতে পারলাম। এখন ওরা থাকে অস্ট্রেলিয়া। নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত।
প্রাইমারি স্কুলের বন্ধুরা হারিয়ে গেছে জীবন থেকে বহু আগেই। তবে আমি নিশ্চিত আমি একবার দেখেই ওদের সবার নাম বলে দিতে পারবো এখনো। ক্লাশ ফোর শেষ করে যখন G. LAB এ গেলাম তখনো আজিমপুর কলোনির রাস্তায় আমি ওদের খুঁজেছি। কখনো কখনো এক-দুজনের দেখাও পেয়েছি চটপটি মামার গাড়ীর কাছে। তবে সব থেকে মজার ছিলো Hertfordshire University এ এসে নুরুল আমিনকে পাওয়া। শেষ দেখা সেই ক্লাশ ফোরে, ২০ বছর আগে। Student Centre এ দাঁড়িয়ে আছি। আমার খালাতো ভাই সুমন পাশে দাঁড়ানো। হঠাৎ চমকে উঠলাম একটা মুখ দেখে। একটু মোটা হয়ে গেছে। কিন্তু এখনো চেহারা সেই আগের মতই। সাথে সাথে নামটা মাথায় চলে আসলো। ও নুরুল আমিন না হয়ে যায়ই না। কিউতে ছিলাম বলে কিউ ভেঙে ওকে কিছু বলতে যাইনি। নিজের উপরে একটু সন্দেহও ছিলো। শেষে সুমনকে পাঠালাম। গিয়ে জিজ্ঞেস করতে বললাম ওর নাম নুরুল আমিন আর দেশ বাংলাদেশ কিনা। সুমন অবাক হয়ে তাকালো, কিন্তু কথা শুনলো। এরপর কত কথা, কত গল্প। ঐ একদিনই। ও সেদিনই চলে গেলো লন্ডন আর আমি হ্যাটফিল্ড। ২৫ মিনিটের দূরত্বের পথ। মোবাইলের যুগে যোগাযোগ কিছুই না। কিন্তু যোগাযোগ হয়না তেমন একটা। দোষ ওরো না আমারো না। দোষ সর্বগ্রাসী অস্থির সময়ের।
G. LAB, আমার প্রিয় স্কুল। ৫ম থেকে এস এস সি। কী সব দিন ছিল এক একটা। পড়া, টিচারদের শাসন, স্নেহ, বন্ধুদের সাথে তুমুল দুষ্টামি, আড্ডা, খেলা আর ক্লাশ শেষে কিংবা টিফিনের সময় এক প্লেট চটপটি। চেটেপুটে খাবার পর মামাকে অনুরোধ, “মামা একটু টক”। শেষ করে আবার অনুরোধ, “মামা আর একটু দাও”। ঢাকা কলেজের ভিতর দিয়ে নিউমার্কেটের দোতলায় চলে যাওয়া। আকর্ষণের নাম, নতুন আসা ভিডিও গেমস। কয়েনের পর কয়েন খেলে হঠাৎ মনে হওয়া দেরী করে বাসায় যাবার কারণ কী বলবো। র্যাগ ডের দিনে প্রথম গায়ে চাপালাম, Proud To Be Laboratorians, ছাপ দেওয়া গেঞ্জি। কী অসাধারণ লাগছিলো সবাইকে। গর্বিত এক যুগের শেষ ধাপের ছাত্র আমরা। সব মিলিয়ে অদ্ভুত সময়। কিন্তু সেই সময়ের মূল্য আমরা তখন কেউ বুঝিনি। আসলে কেউ বোঝেও না। আজ যখন পিছনে ফিরে তাকাই আমার অন্ধকার অতীতের অতল গহ্বরে ঐ সময়ের আলোক শিখাটাকে অনেক বেশী উজ্জ্বল মনে হয়। মাঝে মাঝে সেই হারিকেনের সলতেটা একটু উসকে দিতে হাজির হয় মিচিক, নিটলা, রবিন, আলভি, ইমন, রাসেল, রনি, পরাগ, নোমান, শাহরিয়ার, রিন্টু এই নামগুলো। যেমন আজ আমার ফেবুর দেয়ালে উইশ করে ওরা মনে করিয়ে দিলো “দোস্ত আছি, বেঁচে আছি”। সময়ের প্রয়োজনে সাত সমুদ্র তের নদী দূরত্বে থাকলেও উষ্ণতা টুকু ঠিকই টের পাই আমি। কিন্তু মনের শীত যে যায় না।
নটরডেম- এক অদ্ভুত জায়গা। হাজার কোলাহলের মাঝেও সবাই কেমন যেন একা একা, বিছিন্ন দ্বীপ একএকটা। কুইজ আর ল্যাবের চাপে অনভ্যস্ত আমি সেইরকম সময়ই বা পেলাম কই। পড়াশোনার দিকে মনোযোগ যতটা না ছিল তার চেয়ে হাজার গুন বেশী উদ্যমে ক্লাবের কাজ করতে ভিকারুননেসায়, হলি-ক্রসে আর আইডিয়ালে যেতাম। এই আসা-যাওয়া করতে করতেই নটরডেম ছেড়ে যাবার সময় হলো। সেই সময়ের বন্ধুদের সাথে মাঝে মাঝে দেখা হত পিজির লাইব্রেরীর দরজার সামনে। পোস্ট গ্রাজুয়েশনের তাড়া, চা-পুরি আর বন্ধুর আকর্ষনের চেয়ে অনেক বড় তখন তাদের কাছে। হারিয়ে যাওয়া সময় আর সেই চেহারা গুলো একদমই মুছে গেলো জীবন থেকে। এমনতো হবার কথা ছিলনা। কিন্তু এমনই যে হয়।
হলি-ফ্যামিলি। পবিত্র পরিবার। আমার প্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জীবনের পাড়ি দেওয়া সময়ের মাঝে এর সাথেই আমার সব দেনা পাওনার হিসাব। দেনার কথা তুলে অকৃতজ্ঞ হতে চাইনা। শোধ করার সামর্থ্য কোনদিন হবেনা। তবে পাওনা কিন্তু কিছুই নেই। যা পেয়েছি এক জীবনে কয়জন এমন পায়?? জীবনের চরম সুখের বা চরম কষ্টের সময়গুলোর সাথে এই প্রতিষ্ঠান আর এর মাধ্যমে পরিচিত হওয়া মানুষগুলোর নাম আসবেই। আসতেই হবে। মুছতে চাইলেও পারবো না। ভুলতে চাইলেও ভোলা সম্ভব না। ১ম বছরের ৩টা মাস। এক কথায় অসাধারণ। নতুন নতুন বন্ধু। কী যে এক উচ্ছ্বলতা!! নিউমার্কেট, বুড়িগঙ্গা, টি এস সি, নিদেন পক্ষে বেইলি রোড বা কর্ণফুলি গার্ডেন সিটি। ঘুরতে আমাদের যেতেই হবে। দুপুর ২টার পর বাধ্যতামূলক কলেজ ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে হতো বলে কী মন খারাপ আমাদের। লাইব্রেরীর অভাবে লেকচার গ্যালারি ১ এর সামনে পাটি বিছিয়ে পড়া, প্রতি শুক্রবার কারো না কারো বাসায় গ্রুপ স্টাডি চলতো আমাদের। দিদির বাসার বাদাম দেয়া খিচুড়ি, সুবাস্তু টাওয়ারে সানজিদার খালার বাসার চিকেন নাগেটস, শাওনদের বাসায় আন্টি আর আপুর বানানো বিকালের নাস্তা, শিফাকদের ওখানে আন্টির হাতের কাস্টার্ড আর নুডলস, ইমনদের বাসায় দিনের পর দিন আমাদের অত্যাচার আর আন্টির হাসি মুখ, কুমুর বাসায় যখন তখন চলে যাওয়া, খাওয়া, আড্ডা, গান, সুমন-রাসেলদের মেসে রাত জেগে পড়া বাদ দিয়ে প্রেম নিয়ে গবেষণা আর কার্ড খেলা- কী এক দুর্লভ সময় পেছনে ফেলে আজ এতটা পথ সামনে চলে এসেছি আমি। মনের জানালা ধরে উঁকি দিলে খুঁজে পাই, দেখতে পাই কিন্তু ফিরে যেতে পারিনা, ছুঁয়ে দিতে পারিনা সেই প্রিয়মুখ গুলো। বলতে চাই, চিৎকার করে বলতে চাই- তোরা আছিস আমার মনে, আমি ধরে রেখেছি তোদের সেই যতনে। কিন্তু তোরা জানিস না।
আজও কার্ড খেলায় ব্যস্ত থাকি। কিন্তু বাজি খেলে আর রাত ভোর হয়না। আজও ভোর রাতে খেলা শেষে খেতে বসি কিন্তু থ্রি স্টার বা মগবাজার ওভার ব্রিজের নিচে ফেলে আসা সেই স্বাদ পাইনা। আজও মানুষ ভুল কল দেয় কিন্তু ভুলতে পারিনা শুধু ডায়মন্ডের কুইন আর জ্যাক-২টা কার্ড নিয়ে শাওনের ২ ডাইস কলটার কথা। আজো ঘুরতে যাই- ব্রাইটন কিংবা এসেক্সের সমুদ্রের পাড়ে কিন্তু মন চলে যায় স্টাডি ট্যুরের সেই কক্সবাজারের বিচে। এখনো সবুজ দেখি ক্যামব্রিজে কিন্তু বান্দরবন থেকে চোখ সরে না। হ্যাটফিল্ডের পথে পথে ঘুরি, গান শুনি। চোখ মেলে দেখি ছেলে মেয়েরা দুষ্টামি করতে করতে হেটে যাচ্ছে। আমার চোখে ভেসে ওঠে শাওন আর শিফাকের সাথে কলেজ থেকে বাসায় ফেরার স্মৃতি। রিকশায় উঠলেই ২ টা গান আমাদের গেতেই হত- ভালোবাসতে হবে আমাকে যে তোমার অবশ্যই আর You are my sunshine, my only sunshine. কথাগুলো ভুলে গেলেও সুরটা এখনো কানে বেজে যায়।
বন্ধুদের জন্য কখনো কিছু করেছি এ দাবী করিনা। সেই সাহসটাও নেই। কালের আবর্তে যে সম্পর্কের গায়ে জমেছে রাজ্যের ধূলো তার উপর দাড়িয়ে দাবী করাও যায়না। তবুও আমি মাঝে মাঝে প্রাণপনে ধূলো সরাবার চেষ্টা করি। দেখার চেষ্টা করি ফেলে আসা পুরানো অতীত। যদি তার কোন এক ঝলকে জীবনটা আবার আগের মত হয়ে যায়। যদি আবার সেই কন্ঠগুলো আমার নাম ধরে ডেকে যায়। আবার যদি কোন এক সন্ধ্যা বেলায় সবাই মিলে চলে যাই মিনারা প্রেস থেকে দ্বীপাঞ্চল হওয়া মনসুর ভাইয়ের আড্ডায়। আমাদের স্মৃতির একটা এলবাম করার কথা ছিল যে। আমি অপেক্ষা করি। আমি কান পেতে থাকি জারিনের কিংবা মনির গান শোনার জন্য। আমার বারবার শুনতে মন চায় যীশুদার গাওয়া সেই চাকমা সঙ্গীত। আমার অপেক্ষা ফুরায় না। সোহাগের মুখে সেই, “পুটু মারা সারা, আকাশে উঠছে তারা”- অনেকদিন শোনা হয়না। অনেকদিন মুখে মুনির ভাইয়ের চা নিয়ে দেখিনা ক্যারমবোর্ডে রাসেল এর সেই অসাধারণ সব স্ট্রাইক। পাল্লা দিয়ে অনেকদিন সুমনের সাথে ভাত কিংবা পরোটা খাওয়া হয়না। মনের সাধ মিটিয়ে কুমুর পিঠে যে কতদিন হলো থাপ্পড় দেই না, ভুলেই গেছি। লোপা, নীতু, মুন্নার সাথে সেমিনার প্রেজেন্টেশন ও আর তৈরী করতে হয়না আমার। কিংবা সিলভীর সাথে প্রোগ্রাম নিয়ে কোন আলোচনাও নেই এখন আর। টুইংকেল এর গিটার আর টুংটাং করে না এখন। লীন চিনের সেই থাই স্যুপের স্বাদ ভুলতে বসেছি। এসব কত যুগ আগের কথা। হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো এভাবেই ফিরে ফিরে আসে আমার কাছে। বয়স বেড়ে যাচ্ছে, পাল্লা দিয়ে কমছে চোখের জল। এখন চোখে আর জলও জমেনা। পরিবর্তে এক দীর্ঘ হাহাকার বের হয়ে আসে মনের অতল থেকে। সেই হাহাকারের সুরে আমি গেয়ে উঠি
“আমি ফিরে পেতে চাই সেই বৃষ্টি ভেজা সুর,
আমি ফিরে পেতে চাই সেই সুখের সমুদ্দুর।
শুধু একটি বার, একটি বার তোমরা বৃষ্টি ঝড়াও-ফিরে চাও,
শুধু একটি বার, একটি বার তোমরা স্বপ্ন ওড়াও – ফিরে চাও
আমার সুরের সাথে তোমাদের সুর মিলাও”।
হঠাৎ আমার মোহ ভঙ্গ হয়। যান্ত্রিকতার দাবানলে পুড়ে, বাস্তবতার আবেগহীন নিরেট পাথরে ধাক্কা খেয়ে আমি ভেঙে চুরমার হয়ে হই। আমার সোনালী দিনগুলো হারিয়ে যায় উদাসী বিকালের মায়া নিয়ে। আমি চেয়ে থাকি, আমার কিছুই করার থাকেনা। আমি আবার ফিরে যাই সেই গানওয়ালার কাছে।
“ও গানওয়ালা আর একটা গান গাও
আমার আর কোথাও যাবার নেই, কিচ্ছু করার নেই”।
পরিশিষ্টঃ
মাত্র কিছুদিন এখানে একটা মানুষের সাথে পরিচয় হলো। অল্পকিছু দিনের মধ্যেই সে আমাকে বন্ধুত্বের দেনায় বেঁধে ফেলেছে। আমার প্রোজেক্টের কাজে অসম্ভব সাহায্য করেছে মেয়েটা। জোর করে বাধ্য করেছে প্রোজেক্টের লেখা শেষ করতে।
ফেসবুকে আর একটা মানুষ আছে। আমার মন খারাপ থাকলে এই ফেবু ফ্রেন্ডটা কিভাবে যেন টের পেয়ে যায়। যদিও আমি তাকে যথেষ্ট অবহেলা করি তবুও সে খুব ভালো একজন বন্ধুর মত সবসময় আমার পাশে থাকে। জন্মদিন উপলক্ষে সে আমার জন্য একটা কবিতাও লিখে ফেলেছে।
- শ্রেয়সী ও রোদেলা সেই দুইজন মানুষ। এই লেখাটা তোমাদের দুইজনের জন্য। শুধু এটা বুঝানোর জন্য যে এত ভালোবাসা আমার প্রাপ্য না। আমি খুবই তুচ্ছ মানুষ। তোমাদের এই বিশাল ভালোবাসার সম্মানটুকু দেবার সামর্থ্য ও আমার নেই। শুধু আল্লাহ-র কাছে দোয়া করি তোমরা ভালো থেকো সবসময়।
editor's pick
latest video
news via inbox
Nulla turp dis cursus. Integer liberos euismod pretium faucibua