বিসর্জনের আলো

Published On: April 10, 2012By Tags: , Views: 63

অদ্ভুত এক সময় পার করছে রোদেলা। কিছুতেই মিলছেনা জীবনের সমীকরণ। একটানা ভাবনার জটে মাথা ঝিমঝিম করছে। তারপরও ভেবে যাচ্ছে সে। গল্পটার শুরুর কথা, মাঝের কথা, সেদিনের কথা। আর আজকের একটু আগে নেয়া সিদ্ধান্তের কথা। চোখ বন্ধ করা বিশ্বাস নাকি যুক্তির বোধ। আবেগের শিহরণ নাকি বিবেকের তাড়না? কোনটা থেকে কোনটা বেছে নেবে সে? জোছনায় প্লাবিত সামনের পৃথিবী ক্ষনে ক্ষনে তার রূপ পাল্টাচ্ছে। কফির মগে ঠান্ডা হওয়া বিস্বাদ কফিতে চুমুক দিয়ে মুখটা বিকৃত করে ফেলে সে। এই তিক্ত কফির স্বাদই তার মাথার জটিল সমীকরণটা সহজ করে দিল কিনা জানে না ও। তবে সিদ্ধান্তটা সে নিয়েই ফেলেছে এই মুহুর্তে। অতি প্রিয় ডায়রিটা বের করে আজকের তারিখ আর সময়টা লিখে রাখে সে। ঘড়িতে রাত ৩.৪৫। সময়ের নিচে লিখে রাখে ২টি লাইন। এরপর মোবাইল নিয়ে রাসেল কে মেসেজ পাঠায় – ‘রাসেল, আমার খুব ভয় করছে। অনেক বড় একটা ঘটনা ঘটে গেছে। কাল অবশ্যই পাবলিক লাইব্রেরিতে চলে আসবে ১২.৩০ টায়’।

রোদেলার ঘড়িতে ১২.৪৫। এখনো রাসেল আসেনি। ফোন করলেও ধরছে না। মাথা নিচু করে বসে আছে রোদেলা। আবার শুরু হয়েছে ভাবনার ঝড়। এখন এই ভাবনাটার চেয়ে বেশী যেটা তাকে কষ্ট দেয় সেটা হল অপরাধবোধ। নিজের কাছে নিজে ছোট হবার চেয়ে কষ্টের কিছু আছে কিনা জানে না সে। প্রচন্ড অপরাধবোধ মানুষকে ভিতর থেকে পুড়িয়ে শেষ করে দেয়। রোদেলার মনে এখন নিজের প্রতি অনেক ঘৃণা। সে ভেবেই পায়না সে কিভাবে কাজটা করতে পারলো? কিভাবে সে…??? নিজের অজান্তেই শব্দ করে ছি! বলে ওঠে সে। বার বার ফিরে আসে সেই ২ দিনের স্মৃতি। জীবনের গ্লানিময় ২ টা দিন। নিজের সবকিছু অন্যের হাতে তুলে দেবার সময় কি সে কক্ষনো ভাবতে পেরেছিলো যে বিবেকের কাছে তাকে এতটা জবাবদিহি করতে হবে। হয়ত করতে হত না। কিন্তু রাসেলের গত কিছুদিনের আচরণ তাকে সবকিছু নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে। মাত্র ৬ মাসের ভালবাসার সম্পর্কে সে কিভাবে এটা করতে পারল ভেবে আরও একবার মানসিক যন্ত্রনায় মুখ কুঁচকে ফেলে রোদেলা।

-‘কি ব্যাপার? এত জরুরি তলব?’ রাসেলের কথায় মুখ তুলে তাকায় রোদেলা। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ১.৩০ বাজে।

-‘এত দেরী? এখন দেখছি সময় মত আসাও ভুলে যাচ্ছো’। কিছুটা রুক্ষ শোনায় ওর গলা।

-‘একটু ব্যস্ত ছিলাম’। রাসেলের নিলির্প্ত উত্তর।

-‘ফোন ধরছিলে না কেন তাহলে?’

-‘আরে ব্যস্ত ছিলাম বললাম না’। রাসেলের কন্ঠে এমন কিছু ছিল যাতে রোদেলা চমকে ওঠে।

-‘এভাবে কথা বলছো কেন? আগেতো সামান্য সর্দি হলেও ১০ বার ফোন করে আর ২০টা মেসেজ দিয়ে খবর নিতে। এত তাড়াতাড়িই সব শেষ?’

-‘আরে না। আসলে’- রাসেল হাসার চেষ্টা করে। রোদেলার কাছে এই শুষ্ক হাসির অর্থ খুবই পরিষ্কার হয়ে ধরা দেয়। হঠাৎ রাসেলের হাত ধরে রোদেলা বলে ওঠে- ‘রাসেল, একটা বড় সমস্যা হয়ে গেছে’।

-‘কেন? কি হয়েছে?’ ভ্রু কুঁচকে রাসেল জিজ্ঞেস করে।

-‘আগে বল তুমি আমাকে সবরকম সাহায্য করবে?’ রোদেলার গলায় আশার দোলা।

-“আগে শুনি সমস্যাটা কি? তোমার বিয়ে ঠিক হয়েছে?”

-“না”

-“তাহলে? তোমার বাসায় সব জেনে গেছে?”

-“না”

-“তাহলে কি?” অসহিঞ্চু শোনায় রাসেলের গলা।

-“বাসায় কিছুই জানেনি। কিন্তু এখন সব জেনে যাবে”।

-“কিভাবে?”

-“রাসেল, আমি……………আমি……রাসেল, আমি মা হতে যাচ্ছি”। হঠাৎ যেন বহুদূর থেকে ভেসে আসে রোদেলার অসহায় কন্ঠস্বর। সময় থমকে যায়। রাসেলকে দেখে মনে হচ্ছে কে যেন এক কেজি লবন গুলে ওকে খাইয়ে দিয়েছে।

-“মানে কি?” প্রচন্ড ভয় পাওয়া শিশুর মত ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করে রাসেল।

-“মানে আবার কি। আমি মা হতে যাচ্ছি আর তুমি বাবা। কাল রাতে শিওর হলাম। এখন তো বিয়ে করা ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নেই। আমি কিছুই ভাবতে পারছিনা”। কথা শেষ করে রোদেলা চুপ করে থাকে। রাসেল ও চুপ। তপ্ত দুপুরে প্রকৃতিও কেমন যেন ঝিম মেরে আছে।

-“কি হল? কথা বলো না কেন?” উদ্বিগ্ন গলায় জিজ্ঞেস করে রোদেলা।

-“না। কিছুনা। আচ্ছা তুমি কি শিওর?”

-“অবশ্যই। আমি শিওর হয়েই তোমাকে বলছি। না হলে তো বলতাম না”।

-“হুমম। এক মিনিট আমি আসছি। বলে রাসেল উঠে যায়”।

রোদেলা তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে। ঝকঝকে নীল আকাশে খন্ড খন্ড মেঘ। মেঘের খন্ড গুলো যেভাবে ভেসে বেড়াচ্ছে দূরে দূরে, ওর স্বপ্ন গুলোও সেভাবে চলে যাছে বহুদূরে। কত স্বপ্ন ছিল ওর ভালোবাসা নিয়ে। ভালোবাসার একটা সুন্দর পরিণতি। মেহেদি রাঙ্গা হাত। নিয়ন আর মরিচা বাতির আলোয় ঝলমলে বাড়ি। বন্ধুদের দুষ্টামি। গান, নাচ, আনন্দ। সন্ধ্যার ঘোর লাগা আলোয় হলুদের ছোয়া। বাবুর্চির বিশাল লিস্ট। শাড়ির রঙ নিয়ে তর্ক। কার্ডের ডিজাইন নিয়ে বাবা-মা’র ঝগড়া। বেলা শেষের কনে দেখা আলোয় হঠাৎ জলে টলমল চোখ। অসংখ্য ক্যামেরার উজ্জ্বল আলো। পূর্ণিমা রাতে প্রথম স্পর্শের শিহরণ। প্রথম নিজের মাঝে অন্য জীবনের আগমন ধ্বনি। আর………

-“কি হল? কি ভাবো?” রাসেলের কথায় ভাবনা গুলো আবার ঐ দূর আকাশের খন্ড খন্ড মেঘ গুলোর মত এলোমেলো হয়ে যায়।

-“না কিছু না। আমি ভাবছিলাম আজ আম্মুকে সব খুলে বলবো”। আনমনে বলে রোদেলা।

-“কি??? চিৎকার করে ওঠে রাসেল। মাথা খারাপ। কখনো না। আমি সুমনের সাথে কথা বলেছি। এটা কোন সমস্যা না। ও যেভাবে সুমির সমস্যার সমাধান করেছিল সেইভাবে তোমার সমস্যারও সমাধান হবে”।

-“মানে? তুমি কি বলতে চাচ্ছো? আমার সমস্যা বলছো কেন? সমস্যাটা কি একা আমার? এটা কি তোমার জন্যও একটা চিন্তার বিষয় না? আর সমাধান হবে মানে? তুমি যদি এবরশন এর কথা বলে থাকো তাহলে ভুলে যাও। এটা আমার প্রথম বাচ্চা। আমি কিছুতেই ওকে মেরে ফেলতে পারবোনা”। গলাটা ধরে আসে রোদেলার। চোখে পানি টলমল করছে।

-“বললেই হলো? তুমি কি ভেবেছো? এই অবস্থায় আমি তোমাকে বিয়ে করবো? আমি যা বলবো তোমাকে তাই শুনতে হবে। যদি আমার কথা না শোন তাহলে তোমার পথে তুমি চল”।

-“তার মানে তুমি আমাকে বিয়ে করবে না? তাহলে তোমার বলা সব কথায় মিথ্যা? আমার সাথে সবসময় থাকার প্রতিশ্রুতির কোন মূল্য নেই? আমার ইচ্ছার কোন মূল্য নেই তোমার কাছে? যা তুমি আগে দিনের মধ্যে ১০০ বার বিয়ের কথা বলতে। আর আজ সেই তুমি আমাকে বিয়ে করতে চাচ্ছনা। কিন্তু কেন? তাহলে আমার সাথে এমন সম্পর্ক কেনো গড়ে তুললে? কেন?” এক নিঃশ্বাসে কথা গুলো বলে হাপাতে লাগলো রোদেলা। চোখ লাল হয়ে উঠেছে রাগে, ক্ষোভে আর হতাশায়।

-“এরকম সম্পর্ক তো কোন ব্যাপার না। সবাইতো এখন এটাই করছে। আর এমন সম্পর্ক হলেই কি বিয়ে হয় নাকি? এই যে সোহাগ আর মিথিলার ব্যাপারটাই দেখো না। ওদের মধ্যে তো সব কিছুই ছিল। কিন্তু ব্রেক আপ এর পরেও তো ওরা দিব্যি ভালো আছে”।

-“তারমানে তুমিও অন্যসবার মত? তোমাকে চিনতে এত ভুল হল আমার? তুমিও তাহলে এই ভোগবাদী সমাজের বিশেষ প্রতিনিধি, যারা ভোগের আগে পূজা করে আর ভোগের পর ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে শূণ্য মদের বোতলের মত”।

-“রোদেলা, বোঝার চেষ্টা কর। আধুনিক হও। এটা এখন কোন ব্যাপার না। কতই তো হচ্ছে। সেই আগের যুগের বস্তা পচা আবেগ নিয়ে বসে থাকলে কি চলে বল? তুমি যে এত সেকেলে তাতো বুঝিনি”।

রাসেলের কন্ঠের অবজ্ঞাটুকু রোদেলার মাথায় আগুন ধরিয়ে দেয়। সে স্থির ভাবে রাসেলের চোখে তাকিয়ে দৃঢ় স্বরে বলে যায়- “আমি আধুনিকতা নামক অশ্লীলতার দাসি নই যে আমাকে ফ্যাশন আর প্রগতির নেশায় বুঁদ করে জীবনের আবেগ বেঁচে নৈতিকতা আর মূল্যবোধ নিয়ে ছিনিমিনি খেলাতে বাধ্য করবে। আমি সেই সময়ের আর সেই আবেগের পাগল ভক্ত যখন আমার মা রাত জেগে না খেয়ে আমার বাবার জন্য অপেক্ষা করতো। আমার কাছে ভালোবাসা মানে শুধু ভোগ নয়ই, ত্যাগও। প্রেম মানে শুধু কামনার আগুন নয়, সহানুভূতির ঠান্ডা ছোয়াও। আমি কিছু শুনতে চাইনা। আমি এবরশন করতে পারবোনা। তুমি বিয়ের ব্যবস্থা কর”।

রাসেল একভাবে রোদেলার কথা শুনছিল। ওর চোখের দীপ্তির কাছে মনের অন্ধকার ধরা পরে যাবার ভয়ে ভিতরে ভিতরে কুঁকড়ে যাচ্ছিল। শেষে অবশিষ্ট থাকা মনের জোরটুকু গলায় এনে বলে, “আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারবোনা রোদেলা। এমন সেকেলে ধ্যান-ধারনার মেয়ে নিয়ে জীবনে চলা সম্ভব না”।

-“এটাই তোমার শেষ কথা?”

-“হুমম”। হতভম্ব হয়ে শোনে রোদেলা। একটা মানুষ কিভাবে এত বদলে যায়? শেষে বলে, “আর যদি আমি এবরশন করতে রাজি হই? তাহলে কি হবে?”

-“তাহলে তো খুব ভাল। আবার আমরা জীবনটা উপভোগ করতে পারব”।

-“তাই?” মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করে রোদেলা।

-“হুমম। আফটার অল আমি তোমাকে এখনো ভালোবাসি”। আবার হাসার চেষ্টা করে রাসেল। সে হাসিতে না আছে জোর না আছে প্রাণ।

-“ঠিক আছে। আমি আজ ভেবে তোমাকে জানাবো। তোমাকে পেতে হলে তো আমাকে আমার অস্তিত্ব বিসর্জন দিতেই হবে তাইনা? তবে তাই হোক”।

-“দেরী করোনা প্লিজ। সুমন বললো যত তাড়াতাড়ি করা যাবে ঝামেলা ততই কম”।

-“আমি তোমাকে জানাবো রাসেল। আজ যাই”।

-“আরে যাই মানে? আমি তোমাকে রেখে আসি”।

-“আজ না। কাল হাসপাতাল থেকে বাসায় রেখে এসো”। সুন্দর একটা হাসি দিয়ে বলে রোদেলা।

-“ওহ! সো সুইট। এইতো লক্ষ্মী মেয়ের মত কথা”।

রাত ১১টা। আবার সেই অনুভূতি ফিরে এসেছে। প্রবল অপরাধবোধ। হতাশা আবার বুকে অসহ্য চাপা ব্যাথা। সন্ধ্যা থেকে হাজার কান্নার বর্ষাও পারেনি মনের আকাশ থেকে বিষন্নতার মেঘ গুলোকে নিঃশেষ করে দিতে। নিজের সিদ্ধান্তটা আবার মনে মনে যাচাই করে নেয় সে। হ্যাঁ কাল সে রাসেলের সাথে দেখা করবে। মোবাইলটা হাতে নেয় রোদেলা। মেসেজ পাঠায় রাসেলকে- “আমি কাল ১২টায় থাকবো পাবলিক লাইব্রেরিতে। চলে এসো”।

দুপুরে পাবলিক লাইব্রেরিতে পৌছে দেখে রাসেল আগেই এসে বসে আছে। আজ সুন্দর করে সেজেছে রোদেলা।

-“কি ব্যাপার আজ দেখি আগেই এসেছো?” হেসে জিজ্ঞেস করে সে।

-“হুমম! তোমাকে তো আজ সুন্দর লাগছে। কি ব্যাপার হঠাৎ এত সেজেছো যে?” রাসেলের অবাক জিজ্ঞাসা।

-“আজ আমার একই সাথে খুশির এবং কষ্টের দিন তাই”।

-“বুঝলাম না”।

-“আমি ঠিক করেছি আমরা আগে বিয়ে করবো। তারপর হাসপাতালে যাব। কেমন হবে?” রোদেলা উৎসুক চোখে তাকায় রাসেলের দিকে। রাসেলের চেহারাটা এমন হতভম্ব লাগছে কেন? ভেবে পায়না সে।

ওদিকে রাসেল ভাবতেও পারেনি রোদেলা এমন কিছু বলবে। ও শুধু বলে,- “এটা কিভাবে হয়? কি বলো? আমি তো এটা ভাবিনি”। আর কি বলবে বুঝে পায়না সে।

-“ভাবনিতো কি হইছে? তুমিই তো কাল বললে এবরশনের পর আবার আমরা জীবনটা উপভোগ করবো। তাহলে বিয়ে করতে সমস্যা কি? আর তাছাড়া আমিতো তোমার কথা মেনে নিলাম”।

-“না মানে, আমি, আসলে রোদেলা”, রাসেল বুঝতেই পারেনা কি বলবে। শেষে কিছু না পেয়ে অনেকটা নিরুপায় হয়েই বলে।– “আমি তোমাকে এখন বিয়ে করবোনা রোদেলা”।

-“হুমম। কেনো জানতে পারি? তুমি আমাকে ভালোবাসোনা তাইতো?”

-“আসলে”- রাসেল আর কিছু বলতে পারেনা।

-“আসলে-র পরেরটুকু আমি বলি তুমি শোন ঠিক আছে”। রোদেলা বলা শুরু করে।

-“২য় বার তোমার কাছে নিজেকে সমর্পনের পরে যখন আমি তোমাকে ফোন দিলাম তখন তোমার কন্ঠের পরিবর্তনটা এত ভালো ভাবে টের পেয়েছিলাম যে প্রচন্ড অবাক হয়েছিলাম। এরপর তোমার গত কিছুদিনের আচরণ গুলোকে কোনোভাবেই মিলাতে পারছিলাম না। প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো সমস্যায় আছো। কিন্তু মন মানছিলো না। মনে হচ্ছিলো কোথায় যেন সুরটা কেটে গেছে। আকাঙ্ক্ষিত কোন কিছু পেয়ে গেলে মানুষের আগ্রহ কমে যাবার মতই কমে আসছিলো তোমার অনুভূতিগুলো। আমার প্রতি তোমার সেই মনোযোগ কোথায় যেন হারিয়ে গেল। আর তখন থেকেই শুরু হল আমার স্বপ্ন ভাঙ্গার ক্ষন।  প্রতিদিন তোমার অবহেলার পরিমাণ বাড়তে লাগলো। সমানুপাতিক ভাবে বেড়ে চললো আমার অপরাধবোধ, আর সন্দেহ। নিজের বিশ্বাসের সাথে নিজের ধারনার যুদ্ধ দেখতে দেখতে আমি যখন ক্লান্ত তখন এই সমাধানটা আমার মাথায় এলো। খুব ভালো করে শুনে রাখো রাসেল, আমি কখনো মা হতে যাচ্ছিনা। এটা ছিল আমার ভালোবাসার পরীক্ষা। আমার শরীরে আমি তোমার কোন অস্তিত্ব ধারন করছিনা। আর আজ কেনো সেজেছি জানো? আজ আমার এক নতুন জন্ম হলো। আজ আমি একটা বড় ভুলের বৃত্ত ভেঙ্গে নিজেকে মুক্ত করে নিলাম। আজকের এই দিনটা শুধুই আমার”।

কথা শেষ করে আর দাঁড়ালো না রোদেলা। অতি প্রিয় ডায়রি থেকে গত পরশু রাতে লেখা লাইন ২ টা কেটে দিতে হবে ভাবতে ভাবতে পা বাড়ালো সে। যেখানে লেখা ছিল- ‘আমার বিশ্বাসের কাছে আমার ধারনা পরাজিত হবে’। পাবলিক লাইব্রেরির সিড়িতে তার দীপ্ত পদক্ষেপের শব্দে সবাই হয়তো বুঝলো এক নষ্ট অতীত বিদায় নিলো রোদজ্বলা কোন এক নির্জন দুপুরে।

latest video

news via inbox

Nulla turp dis cursus. Integer liberos  euismod pretium faucibua

Leave A Comment