Since the start of my professional life, I have been trying to establish quite a few projects. Most of them remain incomplete and people tag those as “failures“. But I don’t think like that. For me, all the ventures that I have started are still my inspiration – still I believe one day I will be able to establish those. You can have a look at those and the background stories. Who knows!! Maybe you can find some inspiration as well.
2013
December
চিকিৎসক ডট কম
চিকিৎসক ডট কমের শুরুটা সেই ২০১৩ সালের শেষের দিকে। যদিও এর ভাবনাটা মাথায় আসে আরো আগে। কিন্তু ২০১৩ সালে দেশে এসে ডেল্টা মেডিকেল কলেজে লেকচারার হিসাবে যোগ দেবার পরে ব্যাপারটা নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবতে শুরু করি। ইউকে তে মাস্টার্স করতে গিয়ে ওদের এডুকেশন সিস্টেমের কিছু চমৎকার বিষয় মাথায় ঢুকে যায়। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অনলাইন ভিত্তিক পড়াশোনা। হার্ডফোর্ডশায়ার ইউনির সব স্টুডেন্টদের জন্য একটা করে স্টুডেন্ট একাউন্ট ছিল। একটা বিশাল প্ল্যাটফর্ম ছিল স্টাডি নেট নামে। এসাইনমেন্ট সাবমিশন, লেকচার নোট ডাউনলোড, স্যাম্পল রাইটিং কন্টেন্ট – কী ছিল না? পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে টিচাররা তাঁদের লেকচার আগেই দিয়ে দিতেন প্রিপারেশন নেবার জন্য। আবার যে এসাইন্টমেন্ট সাবমিশন করতে হবে তার আপলোড লিংক থাকতো। রেজাল্টও স্টাডি নেট থেকে দেখে নিতে হত। এই ব্যাপারটা আমার খুবই ভালো লেগে গেল। আমি চিন্তা করলাম অনলাইনে একটা প্ল্যাটফর্ম করতে হবে মেডিকেলের স্টুডেন্টদের জন্য। কিন্তু সেটা স্টাডি নেটের মত হবে না। হবে বেশ অন্যরকম। তখন রাগীব ভাইয়ের শিক্ষক ডট কম মাত্র যাত্রা শুরু করেছে। তবে শিক্ষক ডট কম অনেকটা খান একাডেমির মত অনেক বিষয় নিয়ে কাজ করে। ঠিক প্রথাগত সিলেবাস ভিত্তিক পড়াশোনা সেখানে হয় না। ঠিক এই জায়গাটা নিয়েই আমি কাজ করতে চেয়েছি মেডিকেল সেক্টরে। ডেল্টায় যখন টিউটোরিয়াল নেয়া শুরু করলাম, আইটেম নেয়া শুরু হল তখন দেখলাম স্টুডেন্টদের যতটা না মেধার ঘাটতি তার চেয়ে বেশি সমস্যা টপিক বোঝায়। এর সাথে আছে ইংরেজীতে দূর্বলতা। এই দুইটা বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে, একসাথে দুইটা সমস্যার সমাধান চিন্তা করে প্ল্যান করলাম এমন একটা ওয়েব সাইট বানাতে হবে যেটাতে – সিলেবাস ভিত্তিক টপিকের উপরে আলোচনা থাকবে এবং তা অবশ্যই বাংলায়। শিক্ষক ডট কমের মত এটার নাম ঠিক করা হল চিকিৎসক ডট কম। এই হল সংক্ষেপে চিকিৎসক ডট কমের ধারণা।
ডোমেইন, হোস্টিং কেনা, ওয়েব সাইট বানানোর জন্য ওয়ার্ডপ্রেস শেখা, কন্টেন্ট রেডি করা, লেকচার ভিডিও করা, অফিস নেয়া, এমপ্লয়ি রাখা, একটা আইটি ফার্মের সাথে পার্টনারশিপ করা, ইক্যাবের প্রেসিডেন্ট রাজীব ভাইকে নিয়ে বড় করে ধানমন্ডিতে প্রোগ্রাম করে প্রজেক্ট উদ্বোধন করা, ভিডিও কন্টেন্টের জন্য বরিশাল মেডিকেলের সার্জারির কনসালটেন্ট ইমন ভাইয়ের কাছে যাওয়া, আমাদের শ্যামলির বাসার নিচতালায় অফিস সাজানো, সেখানে স্টুডিও বানানো, ভিডিও করার জন্য এনাটমির একজন সিনিয়র প্রফেসরকে নিয়ে আসা, ভিডিও এডিটের জন্য নিজে নিজে এডোবি প্রিমিয়ার এবং আফটার ইফেক্ট শেখা – সবই হয়েছে। কিন্তু প্রজেক্টটা আর দাঁড় করানো যায়নি। এখনো সব কন্টেন্ট আমার কাছে আছে। খুব সুন্দর একটা ইন্ট্রো বানানো হয়েছিল। সেগুলো অনেক আগের ইতিহাস যা আরো অনেক প্রজেক্টের সাথে কালের গর্ভে লুকিয়ে আছে।
এখনকার সময়ে অনলাইনে শেখার যে জোয়ার চলছে তার মধ্যে তখন এই চেষ্টাটার সাথে লেগে থাকতে পারলে সেটা আজ অনেক বড় হত। তবে আমি এখনো স্বপ্ন দেখি এমন একটা ওয়েব সাইট তৈরি করে যেতে পারবো। সেটা আজ নয়তো কাল।
এভরি ড্রিম ইজ চেজেবল।
2014
June
CURIS – Curative and Rehabilitative Initiative for Society
CURIS – Curative and Rehabilitative Initiative for Society – একটা বিশাল কর্মযজ্ঞের নাম। অন্য অনেক স্বপ্নের মত এটাও শুরু হয়েছিল অমিত সম্ভাবনা নিয়ে। এটার পিছনে অসম্ভব পরিশ্রম, মেধা, অর্থ, সময় – সবই ব্যয় করতে হয়েছে। শুধু যে আমার তা নয়। এটার পিছনে আমি ছাড়াও জুঁই আপু, আমার স্টুডেন্টরা, আরো অসংখ্য ভলান্টিয়ার, অন্যান্য সংগঠন কত মানুষই না জড়িত ছিল। সেই দিনগুলো এখনো আমাকে নস্টালজিক করে তোলে। এই প্রজেক্টের শুরু চিকিৎসক ডট কমের কাজ করতে করতে। তখন আমরা চিকিৎসক ডট কমকে একটা ব্রান্ড হিসাবে দেখাতে চাচ্ছিলাম। একই সাথে চাচ্ছিলাম এই প্রজেক্টে মেডিকেলের ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পৃক্ততা। ভলান্টারি কাজের একটা ক্ষেত্র প্রস্তুত করার ইচ্ছা নিয়ে আগাচ্ছিলাম। এমন সময় হঠাৎ করে অদম্য বাংলাদেশ গ্রুপটার ব্যাপারে জানতে পারলাম যারা পথ-শিশুদের নিয়ে কাজ করে। অদম্য বাংলাদেশ গ্রুপের সাথে পরিচয় হল শাওনের মাধ্যমে। শাওন আমাদের চিকিৎসক ডট কমের ইলাস্ট্রেশনের ব্যাপারটা দেখছিল। শাওন অদম্য বাংলাদেশের সাথেও জড়িত ছিল সেসময়। একদিন অদম্য বাংলাদেশের একটা টিম ওদের প্রধান উদ্যোক্তা আরিয়ান আরিফের সাথে আমাদের লালমাটিয়ার অফিসে আসলো। শুরু হল চিকিৎসক ডট কমের সামাজিক কর্মকান্ড। ডেল্টা মেডিকেল কলেজের বেশ বড় একটা টিম দাঁড়িয়ে গেল ভলান্টিয়ার গ্রুপ হিসাবে। ওদের নিয়ে এরপরের দুবছর আমি ছুটে বেড়িয়েছি শাহাবাগ, কমলাপুর রেল স্টেশন, সদরঘাট টার্মিনাল, আগারগাও বস্তি সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। কাজের মাধ্যমে সাভারের পরিবর্তন স্কুলের টিমের সাথে পরিচয় হয়েছে। সাভারে পরিবর্তন স্কুলেও আমরা হেলথ ক্যাম্প করেছি অনেকদিন।
প্রথম কয়েকটা মাস চিকিৎসক ডট কমের ব্যানারে কাজ করলেও একটা আলাদা অর্গানাইজেশনের প্রয়োজনীয়তা খুব বেশি করে অনুভূত হতে থাকে। সেই ভাবনা থেকে প্রথমে একটা নামের দরকার হল। অনেক খুঁজে পেতে কিউরিস নামটা কেন যেন পছন্দ হল খুব। তখনো এটার পুরো মানে আমি বের করিনি।
Curative and Rehabilitative Initiative for Society এই বাক্যটা মাথায় আসলো রিং রোডে জাপান গার্ডেন সিটির সামনে রিকশায় বসে। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাইনি। সবকিছু নিয়ে কাজ করে গেছি। নিজের স্যালারি, জুঁই আপুর হেল্প, মাঝে মাঝে ভলান্টিয়ারদের সাহায্য – এভাবেই এগিয়ে গেছি আমরা। আরজেএসসি থেকে রেজিঃ ও করলাম। আরো কতকিছু যা লিখতে গেলে পুরো লেখাটা অনেক বোরিং হয়ে যাবে। এই গল্প অন্যকোনভাবে সবাইকে শোনানোর ইচ্ছা আছে।
কিউরিসের মাধ্যমে আমরা যে কাজ গুলো করতাম তা হল – পথশিশুদের ফ্রি চিকিৎসা সাথে মেডিসিন দেয়া, প্রতি সপ্তাহে হেলথ চেক আপ। মেডিকেলে ভর্তি লাগলে সেটার ব্যবস্থা করা। আমরা প্রতিটি পথশিশুর জন্য আলদা আলাদা হেলথ কার্ডের ব্যবস্থা করেছিলাম। সেখানে তাঁদের হেলথ ডেটা নেয়া থাকতো। আমরা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছিলাম – বয়ঃসন্ধির সন্ধিবিচ্ছেদ। কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকালীন বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিষয়ক ব্যাপারে সচেতন করে তোলা। এটা নিয়ে আমরা দেশের অনেকগুলো স্কুলে গিয়েছি। ব্যাপক সাড়াও পেয়েছিলাম। এরপর আসলো বন্যা। ২০১৬ সালের বন্যায় আমরা মোট তিনবার ত্রাণ নিয়ে গেছি হাওড় এলাকা – সুনামগঞ্জ, তাহিরপুর, মোহনগঞ্জ এলাকায়। সেই কর্মযজ্ঞের কথা ভাবলে নিজের মধ্যে একটা অন্যরকম শান্তি কাজ করে।
কিউরিসের অন্যরকম একটা উদ্যোগ ছিল – এক টাকার ডাক্তার। আমার শ্যামলির বাসার নিচতালায় যেখানে চিকিৎসক ডট কমের স্টুডিও ছিল, তার সামনের রুমটাকে চেম্বারে কনভার্ট করেছিলাম। প্রতি সপ্তাহের দুইদিন ফ্রি চিকিৎসা দেয়া হত সমাজের হত দরিদ্র মানুষগুলোকে। অনেকেই আসতেন। চিকিৎসা, ওষুধ যা যা লাগে দেবার চেষ্টা করেছি। অনেকে উপকারও পেয়েছেন। মন থেকে দোয়া করেছেন। এই উদ্যোগে পরে যোগ দিয়েছিল আমার বন্ধু ডাঃ মামুন আর ডেন্টিস্ট প্লাস উপস্থাপিকা ডাঃ সিফাত। এই প্রজেক্ট করতে গিয়েই দেখলাম চিকিৎসা ব্যয়ের অনেক বড় একটা অংশ চলে যাচ্ছে ডায়াগনস্টিক টেস্ট করাতে। অসহায় বোধ করতাম। কিন্তু কিছুই করার ছিল না। আমার এই অসহায়ত্ব হয়তো আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার রহমতের দৃষ্টি দিয়েই দেখেছিলেন। কারণ এই এক টাকার ডাক্তার এবং কিউরিস আমাকে নিয়ে গিয়েছিল সামাজিক উদ্যোক্তা তৈরির অনেক বড় একটা প্লাটফর্মে। যেখান থেকে সূচনা ডাক্তার বাড়ির।
পথ শিশুদের চিকিৎসা
এক টাকার ডাক্তার
বয়ঃসন্ধির সন্ধিবিচ্ছেদ
2017
February
ডাক্তার বাড়ি
২০১৭। ফেব্রুয়ারির এক বিকেল। কম্পিউটারে বসে ফেসবুকে ঘোরাঘুরি করছি। কিউরিসের পেইজে কমেন্ট করছিলাম কী যেন একটা বিষয় নিয়ে। লগ আউট করার ঠিক আগে হঠাৎ একটা পোস্টে চোখ আটকে গেল। স্পার্ক অস্ট্রেলিয়া নামের অর্গানাইজেশন থেকে একটা “অন্ট্রোপ্রেনিউয়ার হান্ট” ইভেন্ট করা হচ্ছে। এখানে তাঁদের লোকাল পার্টনার চ্যানেল আই গ্রুপের বিল্ড বাংলাদেশ। বিস্তারিত জানিয়ে এপ্লাই করতে বলা হয়েছে। তখন আমি উদ্যোক্তা, উদ্যোগ, কর্মশালা – এসব নিয়ে খুব একটা ওয়াকিবহাল নই। তাও কী মনে করে শখের বসে এপ্লাই করলাম এবং ভুলে গেলাম। মার্চের কোন এক সকালে ডেল্টা মেডিকেলে ফার্মা ডিপার্টমেন্টের হেড আফসানা করিম ম্যাডামের রুম থেকে বের হয়ে ল্যাবে যাচ্ছি। এমন সময় অচেনা নাম্বার থেকে একটা ফোন আসলো। মিনিট খানেক ‘আসসালামু আলাইকুম’, ‘জ্বী বলছি’ এসব করার পর বুঝতে পারলাম ফোন এসেছে স্পার্ক থেকে যেখানে আমি কিউরিসকে প্রজেক্ট হিসাবে দেখিয়ে এপ্লাই করেছিলাম। ফোন করেছিলেন স্পার্কের তখনকার কান্ট্রি ম্যানেজার সজীব ভাই (ওবামা স্কলার, ওয়াইওয়াই গোষ্ঠির প্রতিষ্ঠাতা)। বাকিটা ইতিহাস। জীবনের মোড় বদলে যাওয়া, মোটিভ চেঞ্জ হয়ে যাওয়া সবকিছু উলট পালট হয়ে যাওয়া – সবকিছু সেই একটা এপ্লাই আর একটা প্রোগ্রাম থেকে।
কিউরিস নিয়ে ১৫ই এপ্রিল ২০১৭ তে গেলাম বিল্ড বাংলাদেশের অফিসে। আমার সাথে আরো ৯ জন। টোটাল ১০ জন উদ্যোক্তা। সবাইকে নিয়ে যাওয়া হল গাজীপুরের নক্ষত্র-বাড়ি রিসোর্টে। আলাদা আলাদা রুম দেওয়া হল। ভরপুর খাওয়া-দাওয়া, গান, প্রোগ্রাম, আড্ডা সাথে সাত দিনের কোর্স। এখানেই পেয়েছিলাম এরন টেট, আনিতা, এলভিন নামের কিছু মোটিভেটর ও মেন্টরকে। পরিচয় হল আগের বারের উইনার লাইট অব হোপের ওয়ালি ভাইকে। সাথে রুহি, রাস্না, অনিক, সুমন, কম্পোস্ট ম্যান ধনেস্বর দা এর সাথে। সময়টা নিয়ে লিখতে গেলে সারাদিন লাগবে। আপাতত সে পথে না যাই।
প্রোগ্রামের ১ম দিনেই আমাকে বলা হল কিউরিস একটা নন-প্রফিট অর্গানাইজেশন। এটা কত দিন সাসটেইন করবে বলে তুমি মনে কর? আমি কোন উত্তর দিতে পারিনি। তখন বলা হল তোমার সামনে একটাই পথ আর তা হল এটাকে লো প্রফিট মার্জিন কিন্তু খুবই প্রয়োজনীয় কোন প্রজেক্টে কনভার্ট করতে। বলা হল এমন একটা মডেল দাঁড় করাও যাতে সবার বিশেষ করে দরিদ্র মানুষের উপকার হয় আবার তোমার প্রজেক্টের খরচও বের হয়ে আসে। কোন কিছুই মাথায় আসছিলো না। আমাকে ১০ মিনিট ভাবার টাইম দেয়া হল। নক্ষত্র বাড়ির দোতলায় বড় হল রুমের সামনের বারান্দায় পায়চারি করতে করতে সিদ্ধান্ত নিলাম স্বাস্থ সেবার একটা খাতই আছে যেখানে দরিদ্র মানুষের খরচ হয় সবথেকে বেশি। যেখানে সরকারি এবং বেসরকারি সার্ভিসের মূল্যের মধ্যে আকাশ – পাতাল ব্যবধান আর সেটা হল ডায়াগনস্টিক সার্ভিস। এই একটা জায়গায় বেসরকারি স্বাস্থসেবা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রচুর প্রফিট করে। এই একটা জায়গায় প্রফিট নূন্যতম করে একটা লো-কস্ট হেলথ সেন্টার চালানো সম্ভব। এতে গরীব মানুষগুলোর অনেক উপকার হয়। সাত মিনিটের মাথায় সজীব ভাইকে গিয়ে বললাম “আই নিড ইউর এডভাইজ”।
সাতদিন পর গুলশানের লেকশোর হোটেলে ১০২ ডিগ্রি জ্বর নিয়ে ১৫০ জন ডেলিগেটের সামনে প্রজেক্ট প্রেজেন্ট করতে হল মাত্র ২ মিনিটে যেটার পোশাকি নাম – পিচ। রেজাল্ট ঘোষনার সময় দেখলাম আমার প্রজেক্ট দুটো প্রাইজের দুটোই বগলদাবা করতে সক্ষম হয়েছে। একটা ক্যাটাগরি ছিল অডিয়েন্স চয়েজ। আর একটা ছিল পিয়ার চয়েজ। দুটোর প্রাইজমানি আলাদা। অডিয়েন্স চয়েজের জন্য পেলাম ১০০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার আর পিয়ার চয়েজের জন্য ২০০০। মোট ৩০০০ হাজার ডলার। সাথে আরো অনেক অনেক কিছু। ডাক্তার বাড়ি নামটা সজীব ভাইয়ের দেয়া। প্রোগ্রামের ৪র্থ দিন লাঞ্চের সময় উনি নামটা হঠাৎ করেই ঠিক করেছিলেন। আমিও এটাকেই গুরুর আশীর্বাদ ভেবে গ্রহণ করলাম। একই সাথে গ্রহণ করলাম একরাশ স্বপ্ন, বুকভরা কনফিডেন্স – যা আজো চলার শক্তি। ত্যাগ করলাম জিআরই দিয়ে আমেরিকা যাবার স্বপ্ন।
ঢাকায় ফিরে কিউরিসের সবাইকে নিয়ে বসলাম। প্ল্যান-প্রোগ্রাম হল। মোঃপুরের শেখেরটেক ১২ নাম্বার রোডের ২০ নাম্বার বাসার দোতলায় শুরু হল ডাক্তার বাড়ি। এরপর সেটা গেল আদাবরের ১২ নাম্বার রোডে। ডাক্তার বাড়ি লিমিটেড নামে কোম্পানি রেজিঃ করা হল। অস্ট্রেলিয়া থেকে সিড ফান্ড পাওয়া গেল আরো কিছু ডলার। প্রজেক্টে যুক্ত হল অনেক নাম, অনেক স্বপ্ন, অনেক অনেক ইভেন্ট। প্রচার পেল মিডিয়াতে। বিল্ড বাংলাদেশের কাভারেজ পেল। ডাক্তার বাড়ি নিয়ে নিউজ ছাপা হল, রেডিও প্রোগ্রাম হল। আরজে কিবরিয়া ভাই লাইভ করলেন। কতকিছু। একটা সময় ব্যাটের এক ডাক্তার পুরো ব্যাপারটা শুনে আবার আমার জীবনের চাকা ভিন্ন পথে ঘুরিয়ে দিলেন। সে এক অদ্ভুত উত্থান-পতন।
2018
March
CSBF
CSBF (Cure and Smile Bangladesh Foundation)। বিজয় স্মরণীর রাস্তায় যারা আসা-যাওয়া করেন তাঁদের চোখে এই প্রতিষ্ঠানটা পরার কথা। বিজয় স্মরনী মোড় থেকে খুব সামান্য দূরে কলমিলতা কাঁচা বাজারের পাশে যে আটতলা বিল্ডিং সেটাই আমার আরেকটা প্রজেক্ট যেটার পিছনে আমি দুই বছর অমানুষিক শ্রম দিয়েছি। রাত-দিন কখন কীভাবে কোথায় কেটে গেছে বলতে পারিনি। আজকে এখানে মিটিং তো কালকে ফান্ড কালেকশন পরশু ডিজাইন-ড্রয়িং। বাংলাদেশের স্বনামধন্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের অনেকগুলো থেকে সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি ফান্ড কালেকশন করে অত্যাধুনিক এই ডায়াগনষ্টিক হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ডাক্তার বাড়ি প্রজেক্টের বড় এবং কাঙ্ক্ষিত রূপ। যে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং উদ্দেশ্য নিয়ে ডাক্তার বাড়ি শুরু করেছিলাম ঠিক সেটাই স্বপ্নের বাস্তবায়ন হিসাবে এই প্রজেক্টে ধরা দিয়েছিল। অতীতকাল ব্যবহার করতে হল কারণ ২০১৮ সালের মাঝামাঝি শুরু হওয়া এই প্রজেক্টের সাথে আমার সম্পর্ক শেষ হয়েছে ২০২০ এর ১৫ই জুলাই। সেদিন বিকাল বেলা আমি আমার স্বপ্নের প্রজেক্ট ছেড়ে চলে আসি। এর পিছনের কথা কিংবা এর প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ের কথা এখন এই প্ল্যাটফর্মে বলতে চাইনা। কেন সেই প্রশ্নের উত্তর ও দিতে পারছি না। তবে অনেক অনেক পরিশ্রম আর মেধার সর্বোচ্চ ব্যবহারের চেষ্টা থেকে যে স্বপ্নের বাস্তবায়ন তার শিশুকালে তাকে ছেড়ে আসার পিছনে অবশ্যই অনেক গুরুতর কারণই থাকবে। সে গল্প অন্যদিন। প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয় একটা ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে। সেই ট্রাস্টি বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও আমিই ছিলাম।
এই প্রজেক্ট আমার জীবনের পুরো গতিপথ পালটে দিয়েছে। একদিকে আমাকে অসম্ভবের পিছনে ছোটার, তাকে বাস্তবায়ন করার সাহস দিয়েছে, অন্যদিকে অসম্ভব চাপ সহ্য করে নেবার ক্ষমতাও তৈরি হয়েছে এই প্রজেক্ট করতে যেয়ে। পরিচয় হয়েছে অনেক অনেক মানুষের সাথে। যুক্ত হয়েছে অনেক অম্ল-মধুর স্মৃতি। শেষ বেলার গানটা করুণ সুরে বেজে না উঠলে আজ হয়তো এই দূর দেশে এসে রিসার্চে যুক্ত হওয়া হত না। সেই গল্প অন্যকোন সময়ে। হয়তো জীবনের কোন এক পর্যায়ে বলে যাবো এই প্রজেক্টের বিস্তারিত। যা আজো অনেকের কাছে এক বিশাল রহস্য।
2019
March
কোলাহল
আমার একটা খুব বাজে স্বভাব আছে। আমি যেখানে যাদেরকে নিয়ে কাজ করি তাদেরকে পছন্দ হয়ে গেলে সবসময় একসাথে রাখতে চাই। সিএসবিএফ-এ একটা খুব চমৎকার দল পেয়েছিলাম যারা আমার সাথে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে পারতো। যখন যেভাবে বলতাম সেভাবে কাজ করতো। এই গ্রুপটাকে চেয়েছিলাম একসাথে একটা কিছুর মধ্যে বেঁধে রাখতে। এমপ্লয়িদের নিজেদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল এই কোলাহল রেস্টুরেন্ট। যে যতটা পেরেছিল কন্ট্রিবিউট করেছে। কেউ ব্যক্তিগতভাবে ধার করেছে, কেউ সমিতি থেকে লোন নিয়েছে, কেউ ক্রেডিট কার্ডের টাকায় অংশ নিয়েছে। কোলাহল নামটা আমার দেওয়া। এরপর সে এক বিশাল কর্মযজ্ঞ। লোকেশন ঠিক করা, ডেকোরেশন, কেনাকাটা, রঙ, সাজানো, মেন্যু, শেফ – অক্লান্ত পরিশ্রম। এসব কিছু শেষ করে ১৫ই মার্চ যখন সাটার খুলে দেয়া হল তার এক সপ্তাহ পরেই লক ডাউন। সবাই মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলো। তবে ওরা থেমে থাকেনি। গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে গেছে। প্রথম দিকে প্রচুর সাপোর্ট করতে হয়েছে কোলাহলকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে। এরপর আস্তে আস্তে কোলাহল আজকে এই অবস্থায়। এর মাঝে অনেকেই ছেড়ে গেছে – কেউ নিজের প্রয়োজনে, আবার কেউ মতের মিল না হওয়ায়। কোলাহল নিয়ে আসলেই অনেক কোলাহল হয়েছে। সেসব গল্পের ঝাঁপি অন্যদিন খুলে বসা যাবে। এটার থিম ছিল – ঘরোয়া পরিবেশে আড্ডা সাথে বই, গান আর মুখরোচক খাবার। ধীরে ধীরে সেই থিম থেকে সরে এখন এটা কেবলই আড্ডার জায়গা। কোলাহলে আচারী খিচুড়ি বেশ ভালোই নাম করেছে। সাথে সিফুডের কিছু আইটেম, রাইস বোল আর ইন্ডিয়ান প্লাটার। সব মিলিয়ে চলে যাচ্ছে কোলাহল। টিকে আছে অনেক যুদ্ধ করে।
2020
September
Spice Tree
স্পাইস ট্রি – নামটা দেখেই অবশ্য বুঝে যাবার কথা এটা মশলা সম্পর্কিত ব্যাপার-স্যাপার। ধারণাটার জন্ম হয়েছিল বিশুদ্ধ মশলা সরবরাহ করার অভিপ্রায়ে। ভেজালের ভিড়ে খাঁটি মশলা সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাত, প্যাকেটিং করে স্বল্প লাভে বিক্রি করার উদ্যোগ ছিল এটি। আমি এখনো মনে করি এটা অত্যন্ত যুগোপযোগী একটা আইডিয়া ছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় শুরু করে মাস তিনেক চলার পর এটার পিছনে আমি সময়ই দিতে পারিনি। মনিপুরের আদর্শ রোডের নীচতলায় অফিস নিয়ে, মশলা প্রক্রিয়াজাত করার ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। কুষ্টিয়া থেকে আম্মু নিজে দেখে শুনে হলুদ, মরিচ এগুলো কিনে দিয়েছিলেন। এখানে ভাঙ্গিয়ে প্যাকেটিং ও করা হয়েছে। বিক্রিও হয়েছে বেশ কিছু লট। তবুও উদ্যোগটা পূর্ণতা পায়নি শুধুমাত্র আমার সময় দিতে না পারার কারণে। আমি তখন আইইএলটিএসের প্রিপারেশন নিয়ে খুবই ব্যস্ত। এরপর আস্তে আস্তে উদ্যোগটা থমকে গেল। কিন্তু ইনশাআল্লাহ একদিন এটা আবার শুরু হবে। ইট ইজ অলওয়েজ বেটার লেট দেন নেভার।
2023
June
বুঝে পড়ি
এডুকেশন নিয়ে কাজ করাটা মনে হয় আমার অবচেতন মনের একটা দৃঢ় আকাঙ্ক্ষা যা কোন না কোন ভাবে আমাকে নতুন করে কিছু শুরু করতে উদ্বুদ্ধ করে। চিকিৎসক ডট কম নিয়ে হতাশাজনক অভিজ্ঞতা থাকা স্বত্তেও আবারো আমি নতুন একটা শিক্ষা উদ্যোগ শুরু করেছি। তবে এটা শুধুমাত্র মেডিকেল রিলেটেড না। এটা সাধারণ বিজ্ঞান শিক্ষারও একটা প্ল্যাটফর্ম। এখানে থাকবে শ্রেণি ভিত্তিক বিজ্ঞান বিষয়ক ক্লাস। যেগুলো হবে শুধুমাত্র সিলেবাস ভিত্তিক। বাংলা এবং ইংরেজী দুই ভাষাতেই করার ইচ্ছা আছে। আপাতত সিলেবাস যোগাড় করা, বই ডাউনলোড করা হয়েছে। ক্লাস শুরুও করেছি। প্রথম শুরু করেছি জেনেটিক্স দিয়ে। এ পর্যন্ত ২০টির ও বেশি ক্লাস রেকর্ড করে ইউটিউবে দিয়েছি। সাড়াও পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। এরপরে আবার বিরতি। তবে এবার যৌক্তিক কারণ আছে। পিএইচডি-র এপ্লাই, জবের এপ্লাই এসব নিয়ে খুব ব্যস্ত ছিলাম। বিরতির পর আবার শুরু করার চেষ্টা করছি। দেখা যাক এই প্রজেক্টের পরিণতি কী হয়। এটার একটা ওয়েব সাইট ও তৈরী হচ্ছে প্লাস একটা ইউটিউব চ্যানেল তো অলরেডি আছে। আল্লাহ ভরসা।